স্মার্টকার্ড' হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র। জেনে নিন, যেসব সুবিধা থাকছে স্মার্ট কার্ডে
সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী ১৫ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার বাংলাদেশে ছবিসহ ভোটার তালিকায় নাম উঠেছে ৯ কোটি ২২ লাখের মতো মানুষের। আগামী ২৬ মার্চ দেশের ভোটারদের হাতে তুলে দেয়ার কথা রয়েছে নতুন স্মার্টকার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) । এই স্মার্ট কার্ড নিয়ে সবার মধ্যেই আছে নানা কৌতুহল, দেখতে কেমন হবে, কী কী কাজে লাগবে এমন সব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই সময়ের কণ্ঠস্বরের আজকের আয়োজন ।
২৫টি খাতে এই স্মার্ট কার্ড পরিচয়পত্র ব্যবহার করা হবে। এখানে তিন স্তরে ২৫টির মতো নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। প্রথম স্তরের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য খালি চোখে দেখা যাবে, দ্বিতীয় স্তরের বৈশিষ্ট্যগুলো দেখার জন্য প্রয়োজন হবে বহনযোগ্য যন্ত্রাংশ এবং শেষ স্তরের জন্য কোনো ল্যাবরেটরিতে ফরেনসিক টেস্ট করার প্রয়োজন হবে। এটিকে আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করার জন্য আটটি আন্তর্জাতিক সনদপত্র ও মানপত্র নিশ্চিত করা হবে।
স্মার্টকার্ড কি?
জালিয়াতি রোধে জাতীয় পরিচয়পত্রকে আধুনিকভাবে তৈরি, যন্ত্রে পাঠযোগ্য জাতীয় পরিচয়পত্রকেই স্মার্টকার্ড বলে। একে ভোটার আইডি বলেও অভিহিত করা হয়। বর্তমানে যে পরিচয়পত্র বা কার্ড চালু রয়েছে তা সাধারণ পাতলা কাগজে প্রিন্ট করে লেমিনেটিং করা। যার প্রথম পৃষ্ঠায় নিজের নাম, পিতা-মাতার নাম, জন্ম তারিখ ও আইডি নম্বর এবং অপর পৃষ্ঠায় ঠিকানা দেওয়া। ফলে এই কার্ডটি সহজেই নকল করা সম্ভব। অসাধু ব্যক্তিরা এটি সহজেই নকল করে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে। ফলে নাগরিক ভোগান্তি ও হয়রানি বাড়ছে। এটি রোধ করতেই স্মার্টকার্ড তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে ইসি।এটি যন্ত্রে পাঠযোগ্য। অসাধু ব্যক্তিরা সহজেই নকল করতে পারবে না। ভোটারের বা পরিচয়পত্রধারীর আইডি নম্বর ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য এই আইডিতে সংরক্ষিত থাকবে। শুধুমাত্র যন্ত্রের সাহায্যে এসব তথ্য পাঠ করা যাবে। টেকসই ও সুন্দর অবয়বে এ কার্ড বহুমুখী ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় তা সাধারণভাবে স্মার্টকার্ড হিসেবেই বিবেচিত হবে।
দেশের সব নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দিতেই নির্বাচন কমিশন ব্যাপক প্রস্তুতি চালাচ্ছেন। ইসি সূত্র জানিয়েছে, স্মার্টকার্ড হবে মেশিন রিডেবল, যা কার্ড জালিয়াতির হাত থেকে বাড়তি নিরাপত্তা প্রদান করবে। পরপর দুবার হারালেই কার্ড সংগ্রহে ভোটারকে জরিমানা দিতে হবে দুই থেকে চার হাজার টাকা।
বর্তমানে ভোটারদের কাছে বিদ্যমান লেমিনেটেড ন্যাশনাল আইডি কার্ড ফেরত নিয়ে প্রথমবারের মত বিনামূল্যেই স্মার্টকার্ড দেয়া হবে। এরপর পুনরায় মেশিনে পাঠযোগ্য এই কার্ড পেতে চাইলে একটি নির্দিষ্ট ফি দিতে হবে। জানা গেছে, বিভিন্ন পাবলিক সার্ভিস নিতে এই আইডি কার্ড প্রদর্শন আবশ্যক করার পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের।
এরই মধ্যে ভোটারদের উন্নত মানের স্মার্ট কার্ড দেওয়ার আগে বিদ্যমান জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে । গত রোববার ইসি সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন।
সুলতানুজ্জামান জানান, অনলাইনে আবেদনের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। সোমবার কমিশন সভায় অনুমোদনের জন্য এ সংক্রান্ত প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। “কমিশনের সম্মতি পেলে এক সপ্তাহের মধ্যে এনআইডি তথ্য সংশোধনের জন্য সবাইকে সুযোগ দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে অনলাইন ও লিখিত আবেদন করতে পারবে ভোটাররা।”
বর্তমানে যে জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাল করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। উন্নতমানের এই কার্ড ব্যবহার করে ২০ ধরনের নাগরিক সেবা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ভবিষতে ই-পাসপোর্ট এবং ইমিগ্রেশন সেবাসহ বহুবিধ কাজে এই কার্ড ব্যবহার করা যাবে।
নির্বাচন কমিশনের ডিজি সুলতানুজ্জামান মো: সালেহ বলেন, এই কার্ড এতই বহুবিধ কাজে ব্যবহার করা যাবে যে, তা এখন ধারণাই করা যাচ্ছে না। কেননা এটি পৃথিবীর যেকোনো দেশের স্মার্টকার্ডের চেয়ে বেশি মেমোরি বা তথ্য ধারণক্ষমতাসম্পন্ন কার্ড। বর্তমানে জাতীয় আইডি কার্ডে কোনো ভুল থাকলে অনলাইনেই সেই ভুল সংশোধনের সুযোগ থাকবে।
ইতোমধ্যে একটি অত্যাধুনিক সফটওয়্যার কেনা হয়েছে। সোমবার কমিশন বৈঠকে অনুমোদন হলে আগামী সাত দিনের মধ্যেই এ সুযোগ অবারিত করা হবে। ফলে অনলাইনেই ভুলগুলো সংশোধন করা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে ফরম পূরণের পর সংশ্লিষ্ট উপজেলা কর্মকর্তার সাথেই যোগাযোগ করতে হবে বলে জানান সুলতানুজ্জামান মো: সালেহ।
তিনি বলেন, চলতি বছরের মার্চ থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে ৯ কোটি নাগরিককে স্মার্টকার্ড দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতি মাসে ছয় লাখ করে ধাপে ধাপে কার্ডগুলো সরবরাহ করা হবে। এ ক্ষেত্রে যাদের বর্তমানে পরিচয়পত্র আছে তারাই অগ্রাধিকার পাবেন। এই কার্ডের মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করাসহ দুর্নীতি দমনও সহজ হবে বলেও তিনি মনে করেন।
কার্ড সংশোধনে ভোগান্তির বিষয়ে মহাপরিচালক বলেন, ভালোভাবে দেখে আবেদনপত্র পূরণ করেই একজন নাগরিক জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়ে থাকেন। তার দেয়া তথ্য সংশোধন করতে হলে সুনির্দিষ্ট কারণ অবশ্যই দেখাতে হবে। ভুল সংশোধনের ইনটেনশন দেখেই আমরা আবেদন আমলে নিই।
ইতমধ্যে প্রথমবারের মতো নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ভোটার হওয়ার আবেদন করার সুযোগ দিচ্ছে ইসি। বিষয়টি জাতীয় পরিচয়পত্র বিধিমালায় রাখা হচ্ছে। এমনকি যারা ভোটার তালিকাভুক্ত নন তারাও জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এদিকে নির্বাচন কমিশনের স্মার্টকার্ড প্রকল্পের মাধ্যমে ভোটারদের নতুন যে আধুনিক আইডি কার্ড দেওয়া হবে, সে ক্ষেত্রে ইসি কিছু নতুন বিধিবিধান করতে যাচ্ছে। জানা গেছে, প্রায় দুইশ’ টাকা মূল্যের স্মার্টকার্ড প্রথমে সব নাগরিককেই বিনামূল্যে বিতরণের পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কার্ডের মেয়াদ অন্তত ১০ বছর হবে। এরপর কার্ড নবায়নের জন্য ফি নির্ধারণ করা হচ্ছে (সাধারণ) ২৫০ টাকা। আর জরুরি ভিত্তিতে প্রদানের জন্য ফি থাকছে ৫০০ টাকা। অন্যদিকে হারানো বা নষ্ট কার্ড উত্তোলনে প্রথমবারের ফি থাকছে (সাধারণ) ৫০০ টাকা। আর জরুরি ভিত্তিতে প্রদানের জন্য ফি এক হাজার টাকা। দ্বিতীয়বার হারালে ফি ধরা হয়েছে (সাধারণ) এক হাজার টাকা। আর জরুরি ভিত্তিতে প্রদানের জন্য দুই হাজার টাকা। এ ছাড়া দ্বিতীয়বারের পর কার্ড হারালে বা নষ্ট হলে ভোটারকে জরিমানা বা ফি দিতে হবে (সাধারণ) দুই হাজার টাকা। আর জরুরি ভিত্তিতে প্রদানের জন্য চার হাজার টাকা। এসব ফি ইসি সচিব বরাবর পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে দেওয়া যাবে। ইসি সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের জালিয়াতি রোধে নাগরিকদের দেওয়া হবে যন্ত্রে পাঠযোগ্য জাতীয় পরিচয়পত্র তথা স্মার্টকার্ড। দেশে তৈরি দীর্ঘমেয়াদি এ কার্ডের প্রাথমিক ব্যয় হচ্ছে প্রায় দুইশ’ টাকা। এ ক্ষেত্রে ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে আধুনিক প্রযুক্তির তথ্যসমৃদ্ধ জাতীয় পরিচয়পত্র দেবে ইসি।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, টেকসই ও সুন্দর অবয়বে এ কার্ড বহুমুখী ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় তা সাধারণভাবে স্মার্টকার্ড হিসেবেই বিবেচিত হবে। বর্তমানে এক পৃষ্ঠায় নাম, পিতা ও মাতার নাম, জন্মতারিখ ও আইডি নম্বর এবং অপর পৃষ্ঠায় ঠিকানা-সংবলিত লেমিনেটিং করা কার্ড পাচ্ছেন ভোটাররা। ইসি কর্মকর্তারা জানান, কার্ডের মেয়াদ অন্তত ১০ বছর হবে। প্রথমবার বিনামূল্যে বিতরণের পর হারানো বা সংশোধিত কার্ডের জন্য নির্ধারিত ফি থাকবে। বর্তমানে ৯ কোটি ২০ লাখের বেশি নাগরিক ভোটার তালিকাভুক্ত রয়েছেন। সর্বশেষ হালনাগাদ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত লাখ দশেক ভোটার এখনো জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে পারেননি। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন সেনাবাহিনীর সহায়তায় ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের কাজ শুরু করে। দেশের সব নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার বিধান রেখে গত বছর ৬ অক্টোবর ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (সংশোধন) বিল, ২০১৩’ সংসদে পাস হয়।
এর ফলে ১৮ বছরের কম বয়সীরাও জাতীয় পরিচয়পত্র পাবেন। এদিকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা তথ্য-উপাত্ত তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সংরক্ষণ ও গোপনীয়তা রক্ষার বিধান রাখা হয়েছে বিলে। কোনো ব্যক্তি বা নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বিনা অনুমতিতে ভোটার তালিকা বা জাতীয় পরিচয়পত্র-সংক্রান্ত তথ্য বা উপাত্তের বিষয়ে গোপনীয়তা লঙ্ঘন করলে শাস্তি থাকছে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।
সংগ্রহ : সময়ের কণ্ঠস্বর :
nice post. learn to build your career as a freelance article writer. my blog: khan4writing.blogspot.com
ReplyDeleteধন্যবাদ স্যার আপনর কমেন্ট এর জন্য।
Deletevery smart and helpful post. To know variety micro earning tips from online, pls visit onlinemicroearnbd.blogspot.com
ReplyDelete